সত্যিই আমরা কেউ বেঁচে নেই এই পৃথিবীতে
বেঁচে থেকেও নিষ্প্রাণ,দম দেওয়া কলের পুতুলের মতো দৃষ্টিহীন চোখে তাকিয়ে রয়েছি নির্বাক নজরুলের মতো হাসিমুখে।
বেলাগাম অত্যাচার অনাচার চলেছে দেশময়
খুন হয়ে চলেছে মানুষ নিত্য – প্রকাশ্যে কিম্বা গোপনে। মানবতার চলেছে নিত্য পরাজয়।
হেলদোল নেই, প্রতিবাদ নেই জগদ্দল পাথরের মতো সবাই নিশ্চুপ, মুখে কুলুপ এঁটে বসে আছে সব অজানা আশঙ্কা আর ভয়ে।
তবু নজরুলকে নিয়ে কত আদিখ্যেতা
জন্মদিন পালন করে চলেছে কবিকুল
মৃত বোবা কবিকে শব্দের উপচারে, ধুপে ও রজনীগন্ধা মালায় শ্রদ্ধা জানিয়ে।
শাসকের কত অত্যাচার!
কারার ঐ লৌহকপাটের অন্তরালে কেটেছিলো তার যৌবনের কত স্বর্ণালী দিন
দেশদ্রোহের অপরাধে।
সেকালেও তার মুক্তির দাবী নিয়ে হয়নি কোনও মিছিল মিটিং,ওঠেনি জোরালো প্রতিবাদ জনগণমনে। কত বিদ্রুপ, সমালোচনা অসম্মান!
পরিণামে কবি হলেন নির্বাক,সমাজের ও শাসকের নির্মম নিষ্ঠুরতা দেখে।
প্রতিবাদী কবিকন্ঠ চিরতরে রুদ্ধ হয়ে গেছে নিশ্চিত হয়ে এগিয়ে এসেছিল প্রগতিশীল সুশীল সমাজ, তার সাহিত্য সঙ্গীত নিয়ে শুরু হলো চুলচেরা বিশ্লেষণ,প্রতিবাদী বিভূষণে অভিষিক্ত করে শুরু হলো নাচন কোদন ক্রন্দন দিকে দিকে।
সে নিয়মের এখনো হয়নি ব্যত্যয়
এখনো গুটিকয় কিছু প্রতিবাদী কবি
যাদের শানিত কলম নিরন্তর করে প্রতিবাদ
শাসক ও সমাজের নিষ্ঠুরতা দেখে
তাদের হালে জোটেনা পানি
পরিবর্তে জোটে অবহেলা, ব্যঙ্গ ও বিদ্রুপ
সকলের মাঝে থেকেও তারা একা একা পথ চলে আপন খেয়ালে।
সুশীল কবিকুলও তাদের সন্তর্পনে এড়িয়ে যায় চলে।
জীবন্ত অবস্থায় প্রতিবাদী কবিরা পায়না তাদের প্রাপ্য সম্মান।
নির্বাক নজরুল অধিষ্ঠিত কেবলই ছবিতে মূর্তিতে নানা মঞ্চে অনুষ্ঠানে
জ্বালাময়ী ভাষণে,কাব্যে -সুরে -গানে।
************