হঠাৎ মননে ইচ্ছে জাগল পুরানো ঐ সাবেকি রেলগাড়ি চড়ে যাব এক বেনামী ষ্টেশনে, যেখানে কোলাহল নেই, তবে নির্জনতা আছে। কুহেলিকা নেই, তবে মেঘবালিকা আছে। চেপে পড়লাম ঐ রেলগাড়ি তে। জানালার ধারে বসে প্রকৃতির সঙ্গে আলাপ জমানোর অছিলায়। হাতে ছিল ,” কলকাতা ছাড়ছি ” শীর্ষক এক গল্পের বই। রেলগাড়ির হুইসেল বাজতেই হঠাৎ একটা কন্ঠস্বর আমাকে এলোমেলো করে দিল। আমার ঠিক বিপরীত দিকে এক মাঝবয়েসী ভদ্রলোক, চোখে মোটা ফ্রেমের চশমা, আমাকে বললেন …. ওটা কি গল্পের বই? হ্যাঁ। লেখক? বনলতার রুপকার। তাকে চেনেন ? সুযোগ হয়নি । ছবি দেখেছেন তার ? আবছা। সম্বিত ফিরে এলো আমার, আপনি? আবার এসেছি ফিরে । মানে? মৃদু হেসে বললেন রুপকার না কি একটা বলছিলেন। আমি জীবনানন্দের সঙ্গে এক ই কামরায় ? এতো সৌভাগ্য। আমার যে দুর্ভাগ্য। কেন ? প্রশ্ন করলে সদুত্তর নেই তাই। কিন্তু আমি যে আপনাকেই খুঁজে বেড়িয়েছি বহুকাল। কেন ? বনলতার বিহনে। সে এখন অতীত। মানে? বনলতা এখন অন্য কারোর। তবে আপনি? তাকে ভালোবাসা দিয়ে বুনেছিলাম। ভেবেছিলাম সে সর্বক্ষণ মুখোমুখি বসে আমার ভালোবাসায় সিক্ত হবে। তারপর ? হঠাৎ জোয়ার এসে তাকে ভাসিয়ে নিয়ে গেলো অন্তরায়। সে আমার কাছে এখন শুধুই কাঠামো। আচ্ছা তোমার মেঘবালিকা? সে বৃষ্টির পূর্বাভাস। ভালোবাসো তাকে ? জানিনা, তবে মনের জানালায় তার কলমিলতার চিন্হ খুঁজে পাই। বনলতার সাথে তার মিল খুঁজে পাও ? বনলতার আপনার কাছে কাব্যিক স্বত্বায় অধরা। মেঘবালিকা আমার কাছে বাস্তবতায় শিমূল, পলাশের দ্বৈত সঙ্গীত। বনলতার মতো মেঘবালিকার ছবি আঁকতে পেরেছো মুখোমুখি বসে ? আমি আমার খাগের কলমে তার ছবি আঁকি। মেঘবালিকা কি বনলতার মতোই শুধুই চরিত্র ? মেঘবালিকা ও একটি চরিত্র তবে তিস্তার মতো , প্রানস্পন্দিত। চলো, এবার যেতে হবে। যদি বনলতা আবার ফিরে আসে?? মেঘবালিকার ঠিকানা টা আমাকে মেল করে দিও। আর হ্যাঁ, মেঘবালিকা কে বলো , বনলতা আমার সৃষ্টি তবে তোমার মেঘবালিকা সৃষ্টি সুখের উল্লাস।
2024-06-08