বসন্ত এলো বলে তোমাকে বললাম, শাড়ি পড়ো।
টকটকে লাল শাড়ি, যেখানে ডুবে যাবে আমার
পুর্বাপর, এক হতদরিদ্র কবি তোমাকে হয়তো
উপহার দিতো দু-টুকরো গদ্যছন্দ। তুমি বললে-
“শাড়ি আমার পছন্দ না। ওইসব শাড়ি-চুড়ি কতো
আগে ভেঙেচুরে টুকরো টুকরো করে ফেলে
দিয়েছি বনশ্রীর সাততলা বিল্ডিংটার তেতলায়।
আমার ভালো লাগা, মন্দ লাগা, প্রেম-অপ্রেম…
সব গেছে প্রিয়। এই বসন্ত এমন ভিন্ন আর কি!”
আর কিছু বলা হয়নি তোমাকে। হয়তো শাড়ি
তোমার পছন্দ না, কিংবা বাসন্তী শাড়িতে
তোমার গভীর বেদনা! কিংবা বসন্তের চেয়ে
আরো ঢের প্রেম লুকিয়ে রেখেছে এক একটি
অপাংক্তেয় শাড়ি, যেখানে আমার প্রবেশের
কোনো রকম অধিকার নেই। তবুও, কবিদের
তো কতো রকম আত্নহত্যা করবার সাধ থাকে!
কোনো কোনো কবি মরে যায় বিষাদী জোছনায়!
কেউ কেউ প্রণয়িনীরর স্তনে একলক্ষ বছর হাত
রেখে ঘুমানোর পর জেগে উঠে দেখে পৃথিবী
ঘুমায়ে আছে তার প্রেমিকার বুকে। পৃথিবীটা
মূলত নিজে নিজে কেউ না, এক একজন কবি
বস্তুত এক একটি পৃথিবীর অধীশ্বর, কবি মরে
গেলে পৃথিবীও শুধু শুধু আধমরা বেঁচে থাকে।
জীবন্মৃত পৃথিবীর পেছনে মরে থাকে একজন
শক্তিমান অধীশ্বর, অথচ একজন প্রণয়িনীর
বুকের ঘ্রাণ শুঁকে বেঁচে যায় এক একজন কবি।
তোমাকে বললাম, লাল শাড়ি পরো। তুমি গভীর
বেদনায় জানালে, চার বসন্ত হলো তুমি শিরীষের
দিকে তাকাও না। বেদনাময় শীতকাল শেষ হলে
প্রতিবার বসন্ত আসে। শুধু লাল শাড়ি আসে না!