০১।।
সবিশেষ শর্ত
কোথাও কি যাবে? পথ না-হাঁটলে তৈরি হয় না পথ
ঝিনুক কুড়াতে যায় নি যেখানে কেউ
সেই-সৈকতে জাগে না প্রাণের ঢেউ
হাতে হাত রাখো। হৃদয়ে গোলাপ ফুটবেই আলবত!
০২।।
শূন্যতা এক-মেলা
শূন্যের দ্বীপ কেন্দ্রবিন্দুজুড়ে থাকি সারাবেলা
পূর্ণতা খুঁজি। সে তো কোনো এক সোনার হরিণ বটে
তীর আছে। আজ ধনুক কিনতে এলাম হাটের মেলা
তোমার সঙ্গে হঠাতি যে দেখা! এমনও ঘটনা ঘটে?
০৩।।
রাত
রাতের টবে জোছনা মেলে ডাল
সে-ডালে বসে অতিথি নিজঝুম
নিরালা এসো। বসো না এই পাশে
কাটুক রাত আজকে নির্ঘুম!
০৪।।
মিনতি
মহাবিশ্বের অনন্য কোনো গ্রহ থেকে তুমি এলে
এই পথ গেছে দিগন্তে মিশে পুবে লাল নদীতীরে
ওখানে কি যাবে? টেরাকোটা ছায়া রোদ হয়ে ডানা মেলে
দিয়েছে হামেশা। এ-আমাকে রেখো তোমার হৃদয়-নীড়ে!
০৫।।
বিরহ হরিণাসু
দিলে শূন্যতা, নিঃসঙ্গতা কিংবা নিদাঘ ক্ষণ
ডাহুকের ডাকে উন্মুখ হই। নদী আরো কাছে আসে
এ হৃদে হরিণা বেদনা উজায় ভালোলাগা-আলাপন
বিরহের বুকে মুখ গুঁজে বলি, ‘থেকো খুব পাশে-পাশে!’
০৬।।
ফেরা
এসেছ তুমি? নদীর কাদামাটিতে গড়ো গাঢ়
কলসখানা। আমাকে দিলে। কী ভেবে তা তো আবারো নিলে কিনে
ওতেই জল ভরেছ কিছু। সঙ্গে করে চলে যে গেলে। আরো
প্রতিটি ক্ষণে এখানে ফেরো উতালা কোনো দিনে।
০৭।।
প্লবতাহীন বেঁচে থাকা
সাঁতার শিখি নি। তাই কি কখনো
হয় নাই নামা সাগরের বেনো জলে?
তুমি যদি আসো, আমি ভেসে যাই
এক-সমুদ্র ভালোলাগার অতলে!
০৮।।
পাশাখেলা
ছায়ারা আজো খেলছে পাশা জাফরি-কাটা আলোর মন্দিরে
নিমেষে এসে আমার দোরে নাড়ো তো কড়া। আবারো চলে যাও
পাখিপন্থী ভালোলাগার নথিপত্র বৃষ্টি নামে ধীরে
মায়ারূপিণী, ক্ষণে এ কায়া দহনে রেখে মনন কেড়ে নাও!
০৯।।
পাড়ি
দুরন্ত নদী। ওকে পাড়ি দেয় এক-জ্বলন্ত সাঁকো
যাব। যাব। যাব ওই পথ ধরে তোমার কাছেই আমি
স্বপ্নে এসেছ অনন্ত বার! ইশারায় শুধু ডাকো
পথ ভুল হলে, বলো না, ‘তোমার এ তো কোনো পাগলামি!’
১০।।
নেশা
পেয়ারা ফুলের মতো সুন্দর জলে
কার ছবি পড়ে আছে? দাবানল এ হৃদয়ে আইঢাই
নদীর নেশাতে আছি। আঁজলাটা পেতে তুলে নিতে যাই–
ডুবে যায় ছবি আরো প্রগাঢ় অতলে!