এইযে,শুনছেন নাকি?এদিকে শুনুন একটু।
কলার খোসাটা রাস্তায় ফেলছেন ক্যানো?
আপনার সম্মুখে চার হাত পাওয়ালা
জলজ্যান্ত একটা ডাস্টবিন হা করে আছে।
আমাকে দ্যাখা যায়?
নাকি চোখের মাথা খাওয়া?
এই ডাস্টবিনে কলার খোসাটা ফেলুন।
জানেন তো?
প্রতিদিন কতশত পঁচা,দূর্গন্ধযুক্ত আবর্জনা গলাধঃকরণ করতে হয় আমাকে!
শুনবেন নাকি?মজা আছে কিন্তু
ল্যাম্পোস্টের হলুদ আলোয় টিফিন কেরিয়ার দোলাতে দোলাতে সেলাইমেশিনে দেয়াল বোনা যে শরীরটা বাড়ি ফিরছিলো,সে শরীরকে ছিড়ে খেতে উদ্যত ছিলো যে দুটো কালো হাত।
আমি সে কালো হাত দুটো গিলে খেয়েছি।
যে শরীর হাত পেতে একদিন স্টেনগান ভিক্ষা নিয়েছিলো,মা কে জংলি শুয়োড়ের কামড় থেকে বাঁচাবে বলে।আজকে সেই জং ধরা শরীর আবারও হাত পেতেছে দুটো ভাতের লোভে,তথাকথিত জনপ্রতিনিধি নামের আরেক জংলি শুয়োড়ের কাছে।সে শুয়োড় অবশ্য ভিক্ষা দিয়েছে।
শুধু দুটো ভাতের জায়গায় দুটো লাথি।
অথচ দুদিন পর সেই জংলি শুয়োড়ের পাতের বেঁচে যাওয়া এটোও আমি গিলে খেয়েছি।
অসাম্প্রদায়িকতার গান গেলে,অল্পতেই এদেশের যেসব লামাদের চেতনালিঙ্গ থেকে অর্গাজম হয়।
সে অর্গাজম মোছা টিস্যুও আমি গিলে খেয়েছি।
ক্ষুধার চোটে পূর্ণিমার চাঁদকে ঝলসানো রুটি ভাবা,রেললাইনের ন্যাংটো ছেলেটার কান্নাও আমি গিলে খেয়েছি।
নিজেকে মা দূর্গার উত্তরসুরী বলে,যে নারী মধ্যরাতের রজনীগন্ধা বনে গ্যালো।
তার বক্ষবন্ধনীও আমি গিলে খেয়েছি।
যে কবির কলম কড়কড়ে কাগজের নোটের দাস হয়ে গ্যাছে,সে কলমকে আমি গিলে খেয়েছি।
বড় বড় বাবু সাহেবদের পা চেটে তাদের জুতো পরিষ্কার করে দেয়,যে লালাঝরা জিহবা।
সে জিহবার লালা মিশ্রিত পানের পিক আমি গিলে খেয়েছি।
বড়লোকদের বুদ্ধিজীবীর পঁচে যাওয়া বিকলাঙ্গ বুদ্ধিহীন মগজও আমি গিলে খেয়েছি।
আমি গিলে খেয়েছি,মাসিকের ব্যাথায় কাতড়ানো এই অসুস্থ সমাজের রক্তমাখা ন্যাপকিন।
রাস্তার মোড়ে দাড়িয়ে থাকা,হ্যা আমিই ডাস্টবিন!
অসাধারণ কবিতা।