3.7/5 - (3 votes)

ইপ্শি!
অনেক দিন তোমাকে লেখা হয় না। সেদিন আকস্মিক আমাকে গাড়িতে তুলে নিয়ে খাইয়ে দাইয়ে বাসায় পৌঁছে দিলে। তারপর বেশ কয়েকটা মাস কেটে গেলো তোমার কোন খোঁজ নেই।

আচ্ছা বলতো, তোমার বাকীর খাতায় আমার জন্য প্রদত্ত যতগুলো চুমু জমা পড়ে ছিলো, সেগুলো যে আজকাল কর্পোরেট কোম্পানির ছাগলগুলোর জন্য বরাদ্দ করে তুলে, কাঁঠালপাতা সাদৃশ্য মসৃণ চকচকে ব্যাংকনোটের বান্ডিল নিয়ে বাড়ি ফিরছো। তার হিসাব কি তোমার সদ্য জাতে উঠা স্বামী কখনো জানতে চায়?

তিনি কি জানেন? তার প্রমোশনের জন্য তোমাকে কতবার টেবিলের উপর বসে বসে মিড নাইট ডিমোশন কনসিডার করতে হয়েছে?
এই যে সুখের নামে সিক্স সিলিন্ডার ফোর হুইল ড্রাইভ গাড়ীটা চেপে এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত ছুটে বেড়াচ্ছো। সত্যি করে বলো তো… আমার এক্সএল এর পেছনের সিটে যে রোমাঞ্চকর অনুভূতি লুকিয়ে থাকতো, সেটা কি তোমার শীততাপনিয়ন্ত্রিত চার ফুট বাই সাত ফুটের কেবিনে খুঁজে পাও?

তোমার লন, ট্যারেস, বারান্দা, আর লিভিং জোন নামের যে বিলাসী চতুর্ভূজটা সারাক্ষণ তোমাকে ঘিরে বিরাজ করে, সেখানে একটা কোণ দেখাতে পারবে? যেই কোণের মধ্যে আমাদের পুরনো ট্যাংকের বৃত্ত আঁকা যায়? পারবে না।

তোমার ফ্রিজ ভরে আছে বাসি খাবার, আর বিদেশি মদের বোতলে। অথচ এই আমিটা এখনো রোজ একটা করে ডিম ভেজে গরম ভাতে খেয়ে উঠি। আমার মুসুর ডালের ভুনা যখন আলু আর টমেটোতে গড়াগড়ি খায়, তখন ভাত মেখে তোমার গালে তুলে দেয়ার সেই পুরোনো স্মৃতিগুলো প্রায়ই মাথাচাড়া দিয়ে উঠে। তাৎক্ষণিক চড় বসিয়ে দেই গালে। ভাবা বন্ধ করতে হবে।

শোন… তোমার বসের অফিসে একটা ছোট টাইপরাইটারের পোষ্ট ফাঁকা হয়েছে কিছুদিন আগে। যদি অনুরোধে কাজ হয়, তবে চাকরীটা আমার প্রয়োজন। তবে তার বিনিময়ে যদি এক্সট্রা এ্যাফেয়ার ওভার টাইম ডিউটির নামে সো-কল্ড কোয়ালিটি টাইম স্পেন্ড করার নাটক করতে হয়, তো থাক। বাদ দাও। ওসব বরং তোমার উর্দ্ধগামী স্বামীর জন্যই থাকুক।

বিনীত,
তোমার ক্লাসের
সবচেয়ে মেধাবী ছেলেটা।।

guest
0 Comments
Newest
Oldest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments