5/5 - (1 vote)

কবি সম্মেলন চলমান থাকাবস্থায়
উপস্থিত বুদ্ধিজীবিদের একাংশ
‘আফিম’কে গালমন্দ করতে শুরু করলো।
এমনকি ভরা সভা থেকে তাকে ঘাড় ধরে
বের করে দেয়ার মতো ঘটনাও ঘটলো।

তবুও আফিমের ঠোঁট নড়লো না।
কণ্ঠস্বর থেকে বেড়লো না একটা টু শব্দও।

ছিঁটকে গিয়ে দুরের রাস্তায় পথের ধুলোয় মিশে
গুনগুন করতে করতে মিহি আওয়াজে হঠাৎ…
একটা শব্দ উচ্চারণ করলো সে! “ভাবো”।

বন্ধ চোখে আফিম ভাবতে শুরু করলো পুরো পৃথিবীকে
সে ভাবতে শুরু করলো পুলিৎজারের মঞ্চ
মনে পড়ে গেলো বিশেষ বিশেষ সংবাদ পরিবেশন
করার জন্য ইতিপূর্বে কতশত মর্যাদা, স্মারক, সম্মাননা
দু’হাতে তুলে নিয়ে নিজের পকেটে পুরেছে
তা হয়তো গণনার প্রয়োজন পরেনি কখনো।

আফিম পুনরায় ভাবতে শুরু করলো
এবারের ভাবনায় তার নিজ কর্মস্থলের কক্ষ
সহকর্মীর চেনামুখ। চিরচেনা স্নায়ুযুদ্ধ
এক অভিন্ন অদ্ভুত পরিস্থিতি
যা হয়তো চাইলেই বদলে ফেলা যায়, অথবা যায় না।

তার প্রকাশিত কয়েকটি লেখার প্রতিক্রিয়ায়
রাস্ট্র বৈশ্বিক উষ্ণতা অনুভব করছে।
ফলে জেলের তালাগুলোতে এখন
মরিচা কেটে যাওয়ার উপক্রম।

আফিমের ভাবনায় এখন বন্দী জীবন।
লাল আটার পোড়া রুটি সাথে কয়েক টুকরা আখের গুড়।
দুপুরের খাবারও নিয়মিত।
হেরফের নেই ঘড়ির কাঁটায়
টিক টিক করে চলতে থাকা সময়ের।

মামলা চলছে। রায়ের সর্বশেষ সিদ্ধান্তের শুনানি আজ।
আফিমকে ঝুলন্ত অবস্থায়
ব্রাশফায়ার করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
আফিম ভাবছে! এখনো ভাবছে।

বুলেটের শব্দ তার কাছে অপরিচিত নয়।
তবে নলের মুখোমুখি দাঁড়ানোর বিষয়টা
একেবারেই নতুন।
তাও আবার বাঁধা হাতে ঝুলন্ত অবস্থায়।

লাশটা কেউ নিতে চাইলো না।
মর্গ থেকে বেরিয়ে বেওয়ারিশ লাশগুলোর সাথে
আফিম ছুটে চলছে দুরন্ত গতিতে।

গাড়ির ঝাঁকুনি ক্ষত চিহ্নের ব্যাসার্ধ বাড়িয়ে দিচ্ছে।
গল গল করে ঝড়ে পড়ছে রক্ত।
এমনকি কাফন জোটেনি শরীরে।

একটা লাশবাহী ব্যাগের ভেতরে
ছিন্নভিন্ন শরীরের টুকরো সমেত
আফিম এখনো ভেবে চলছে তার শেষ গন্তব্য।

ইটের ভাঁটা? নাকি মাঝ পদ্মা?
হোক! একটা কোথাও গিয়ে থামুক এই বিরক্ত যাত্রা।
কোথাও শরীর ঠেকিয়ে দিয়ে
আবার চলতে থাকুক ভাবনার পুরোকল্প।

guest
0 Comments
Newest
Oldest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments