জন্মসূত্রে আমি যে রাষ্ট্রের নাগরিক তাতে নিদিষ্ট কিছু শ্রেণী আছে, যাতে করে মানুষ ও মানুষ গুলোকে পার্থক্যে এনে কেনা যায়, বেচা যায়।
আমি কোন শ্রেণীর? তা আমার রাষ্ট্র জানে? সমাজ জানে? একটুকরো দস্তখত কাগজ জানে?
শালা আমার বাপও তো জানে না তার বেয়ারা সন্তান ভিতরে কতটা আগুন পোষে।
আমি মূলত একজন অবক্ষিত ভাবুক, কেবলি ভাবুক
বিষহীন জল ঢোঁড়া; অন্যায়ে ফোঁস করে উঠি এই যা।
মনন-মগজ ও শরীরের ক্রমান্বয়ে অবক্ষয় যেন এই নিষ্কাম প্রাপ্তি।
(এখানে হৃদয়’কে শৈল্পিক কৌশলে আড়াল করা গেল)
যেহেতু ইতিহাস না জানা ধর্মান্ধ আবেগের বদ্বীপে শোষণই একমাত্র শাসক
যেহেতু জ্ঞানহীন হতাশা আমাদের বাড়ীর বড়ো ঘর
যেহেতু রক্ত – যুদ্ধ আমাদের কোনঠাসা সোনার সংসার।
যেহেতু সংগ্রামহীন নির্বোধ হৃদয় আমাদের প্রেমের অভয়ারণ্য।
যেহেতু হিন্দু বৌদ্ধ মুসলিম খ্রিষ্টান মানুষ নয় আলাদা আলাদা জাত
সেহেতু আমরা বাঙালি, আবেগ আমাদের শক্তি, ক্ষমতা আমাদের প্রভু;
তোষামোদ আমাদের একমাত্র পুজা।
বেশি দূর পিছনে নয় ইষ্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানীর একশোটা বছর, আটচল্লিশ কিংবা একাত্তর; গুটিকয়েক সময়-ই আমার ভাবুক হবার জন্য কি যথেষ্ট নয়?
অবহেলিত নজরুল কি আমার একার জাতীয় কবি?
বুড়ো কবি কি এমনি এমনি বিশ্ব কবি?
সাদাত হাসান মান্টো অশ্লীল? ঋত্বিক ঘটক কি শুধুই মাতাল? নাকি নবারুণ
বর্বর স্রেফ নৈরাজ্যবাদী কমিউনিস্ট?
মানুষ তুমি কোন শ্রেনীর নাগরিক? প্রথম? শালা পূজারী!
দ্বিতীয়? শালা ধূত
তৃতীয়? শালা চোর-চামার।
মানুষ তুমি কোন দল? বাম নাকি ডান
আমার তো সালা দু’টো হাতই একী শরীরে সাথে উৎপ্রতোভাবে জুড়ে আছে দেখছি।
আমি আসলে শ্রেণীভুক্ত কেউ না একটা মানুষরুপী ক্ষুধার্ত ব্লাকহোল, আস্ত মুখগহ্বর;
যেখানে পৃথিবীর সমস্ত সমাজ ও সভত্যা রাষ্ট্রের বেড়ি ভেঙে বিদ্যুৎ বেগে আপতিত হয়।
প্রিয় অর্জুন, চেয়ে দ্যাখো কতো আলো যে আলোয় গণকবর, মহাশ্বশ্মান
রক্ত ও বুলেটের হলি খেলা
সবটার শিকারী ও শিকার এই মানুষ গুলোই।
প্রত্যেক মানুষই শিকার, প্রত্যেক মানুষই শিকারী।
তবে সভ্যতা দিয়ে কি আমি আমার পৈতৃক পরিচয় উজ্জ্বল করবো?
তবে পৃথিবীর তো কোনো প্রয়োজন ছিলো না
এই মহাজাগতিক খাদ্য শৃঙ্খল-ই যথেষ্ট।
(সংক্ষিপ্ত)