ধরো তুমি আমাকে পুড়ে ফেললে,
ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে দিয়াশলাই।
কচকচ করে কেঁটে ফেললে ভাঁজ করা
পুরাতন ডায়রীর একটা সুদীর্ঘ রাত।
তবুও তোমার নিস্তেজ জীবনের
ক্রান্তিলগ্নে এসে যদি আমি পোড়া শরীর নিয়ে
আরো একটি বেঁচে থাকার গল্প শুনাতে চাই,
পুরাতন ন্যাতন্যাতা কান্নায় ভেজা গল্প যতো।
তুমি কী শুনবে? নাকি ছিঁড়ে ফেলবে?
নাকি মুখ বাঁকিয়ে গুটিয়ে নিবে নিজেকে
অন্ধকারে প্রদীপ নিভে যাওয়ার মতো?
ধরো তুমি আমাকে অবহেলায় ফেলে রেখেছো
আলমারির ড্রয়ারের এক কোণায়।
চাবি কোথায় রেখেছো মনে নেই তোমার
বালিশের নিচে, খাটের নিচে-উপরে
খুঁজাখুঁজি, রাগারাগি, চেঁচামেচি মনে মনে
বিন্দু বিন্দু ঘাম কপালে, হাতে এক গ্লাস পানি।
কোথায় চাবি? কোথাও নেই।
তন্নতন্ন করে খুঁজে হয়রান তুমি।
চাবির সাথে সাথে আমাকেও
হারিয়ে তুমি কী কান্না করবে?
নাকি ফোলা ফোলা চোখে শূন্য দৃষ্টিতে
তাকিয়ে থাকবে ফ্লোরের উপর ?
আমাকে হারানোর কষ্ট কী গ্রাস করবে তোমাকে?
ধরো তুমি আমাকে বাসস্টপে ফেলে চলে যাচ্ছো,
প্রচুর ভীড় করা বাসে তুমি টেড় দাঁড়িয়ে।
হাসি, ঠাট্টা-তামাশায় মেতে উঠছে কিছু নগ্ন মুখ
বিশ্রী ভাষায় তোমাকে কেউ ডাকছে পেছন থেকে।
রাগে তুমি লাল হয়ে যাচ্ছো দেখে মজা নিচ্ছে ওরা
শিস কাটছে ভেংচি মেরে। তুমি বিরক্ত, অসহায়।
পেছনের ব্যাক গ্লাস ভেদ করে কী তুমি আমাকে দেখবে?
অদৃশ্য বাসস্টপ, দূরে সব।
নাকি মুখ বুজে সহ্য করে চেপে বসবে জানালার কাছে,
বাকিটুকু কিলোমিটারের পথ?
ধরো তুমি কোচিং-এ যাচ্ছো গলির মুখ দিয়ে,
হাতে ইয়ে বড় বড় মোটাসোটা বই।
আমিও তখন গলির মুখে দিয়ে যাচ্ছি হাতে বাজারের ব্যাগ
মুখোমুখি দুজন, পিনপতন নীরবতা।
একটা হাসি তোমার গাল বেয়ে পড়ছে দেখে
আমার বুকে দুই হাজার বছরের পুরোনো ভিসুভিয়াসের
ধ্বসে বিধ্বস্ত হয়ে যাওয়া শহর যেন নতুন প্রাণ পেলো!
তুমি কী তখন আমাকে ভেঙেচুরে ফেলে দিয়ে
রাস্তায় রেখে হনহন করে চলে যাবে?
নাকি চুপটি করে আমার ভেতর
ঘাপটি মেরে বসে থাকবে?
খুবই ভালো হয়েছে।