Review This Poem

মৃত্যুকে নিয়ে কবিতায় খেলতে খেলতে,
আমি মৃত্যুকে ভুলে গেলাম।
আমি জোর গলায় বলতে পারবো না,
প্রতিটি ঘুম আমার মৃত্যুসম।
প্রতিটি ঘুম আমার একেকটি বিভ্রম,
আমি প্রতি ঘুমে হারাই কল্পে-কল্পে,
আমার সকল অপ্রাপ্তিদের পেয়ে পেয়ে।
ঘুম তাই আমার মৃত্যুসম নয়,
কেননা মৃত্যু আসবে পূর্ণতায়।
যদি না আসে তা হচ্ছে হারিয়ে যাওয়া,
বিজ্ঞপ্তিহীন চলে যাওয়া।
মৃত্যুকে নিয়ে এত জল্পনা কল্পনা করেছি,
এখন আর তাই মৃত্যুকে অতিপ্রাকৃত মনে হয়না।
খুবই সরল পথ মনে হয়, জন্ম-মৃত্যু।
এবং আমার জন্ম খুবই ভুল ছিল, প্রকট ভুল,
তাই আমার মৃত্যুও একটি ভুল হবে, অস্ফুট ভুল।
ফজরের সৌরভে না, ছায়াবৃত সন্ধ্যায় না,
শীতের কুয়াশায় না, শরতের হাওয়ায় না,
গ্রীষ্মের মিষ্টতায় না, বসন্তের উৎসবে না‌।
অর্থাৎ কোনো কাব্যিক মৃত্যু হতে যাচ্ছে না।
একজন কবি হিসেবে আমি খুবই দুর্বল,
কাব্যিক মৃত্যু? কবিতায় মোড়া মৃত্যু?
এরা আমার নয়।
আমি কোদাল দিয়ে খুবলে খুবলে,
আমার রাতের ঘুম তুলে ফেলি,
কুকুরের আক্রোশে আমার বিধ্বস্ত রাতের কবিসত্ত্বা।
ঘুমকাতুরে খাতায় কেবলই ঘুমন্ত কবিতারা,
তাদের চুমু কেটে আমি নিঃসঙ্গতার কাছে যাই,
ধার নেই কল্পনা, এবং শুরু হয় আমার কল্পনা।
সনাতন প্রেমের অলীক জালে আটকে যাই,
কীভাবে এখনো বিশুদ্ধ একাকী?
মৃত্যুসম কেবলই সনাতন প্রেম,
দেখো কীভাবে কবিতায় স্বরূপ প্রত্যাবর্তন,
বিশুদ্ধ একাকিত্বের প্রত্যাবর্তন,
সনাতন প্রেমের প্রত্যাবর্তন।
আমি কি কল্পনা করতে পারি না,
আমি হয়ে যাব নিরয়ের এক নরদেবতা,
যেহেতু নোংরা পাপী হয়েও,
আমার রয়েছে কিছু সুন্দর পূণ্য।
যাকগে আমি অত কিছু চাই না,
নারীর কোমল উষ্ণ কোলে মৃত্যু চাই না,
হোক বিরাগী একাকী মৃত্যু।
জন্মতে অনিচ্ছা সত্ত্বেও,
বহু স্বজন আমায় আপন করে,
এবং বেঁচে থাকতে তারা পর করে দেয়,
তো তাই ধরে নিচ্ছি আমার মৃত্যুতে,
বিদায় জানাতে লোকেদের অনুপস্থিতি থাকবে।
রাশি রাশি বিষন্নতার সুর বেজে আসবে,
নীরব সুর, অনুভব্য কম্পন সেসব।
নিখিল আকাশ তার কাব্য হারিয়ে ফেলবে,
নিখিল সমুদ্র তার প্রাণ সত্তা হারিয়ে ফেলবে,
নিখিল স্থল তার উদ্যমতা হারিয়ে ফেলবে।
কেন প্রকৃতি এসব করবে?
আমাকে বিদায় জানাতে না অবশ্য‌ই,
সেদিন যে তারাও একটু মৃত্যু রোলে মেতে উঠবে তাই।

guest
0 Comments
Newest
Oldest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments