এক পুরুষের জবানবন্দি
***************
সুজিত কুমার ভৌমিক
যিনি সংসারের ঘানি কলুর বলদের মতো,
টেনে নিয়ে চলেন, তিনিই পুরুষ।
যিনি সংসারের সমস্ত দুঃখ, কষ্ট, বেদনা,
যন্ত্রনাকে হাসিমুখে নিয়ে সংসারকে বাঁচাতে,
নিজেকে একটি ছাতার মতো রাখেন,
তিনিই পুরুষ।
যিনি সংসারের চড়াই,উতরাইকে জীবনপথের,
ট্রেনলাইনের আঁকাবাঁকা ধরে নিয়ে এগিয়ে চলেন,
তিনিই পুরুষ।
যিনি পূজোর সময় সবাইকে নতুন জামা কাপড়,
কিনে দিয়ে মানিব্যাগটাকে হতাশার সাথে,
দীর্ঘনিশ্বাস ফেলে দেখেন মাত্র কয়েকটি টাকা,
পড়ে আছে এবং ভাবেন–
“থাক্, এই বছর নিজের জন্য নাই বা
কিনলাম,সামনের বছর কিনে নেব ক্ষন “,
তিনিই পুরুষ।
যিনি সংসারের সবার খুশীকে নিজের খুশী
মনে করেন এবং নিজের খুশীকে এক খামখেয়ালী
বদমাশ, কুৎসিত, কদাকার, বিভৎস্য কোন শত্রুর
সাথে তুলনা করেন,
তিনিই পুরুষ।
যিনি…যিনি….শুধু ঘড়ির কাঁটার মতো সবাইকে
কর্তব্যের সুখ দিয়ে যান, তিনিই পুরুষ।
সত্যি!! পুরুষ এক বিচিত্র জীব,
যা এক অদ্ভুত মেশিন, যাকে শুধু সবাই নিজের
ভালোর জন্য, নিজের আপ্তসহায়ক করে রাখেন কিন্তু কখনও তার কী সখ,তার কী চাওয়া,
তার কী বাসনা, এগুলো শুধু প্রবাদ বাক্যের মতো
পুরনো কোন হলুদ পাতায় লুকনো কথা হয়েই থাকে।
পুরুষ সেই এক বিচিত্র জীব,
যা সাংসারিক জীবনে ফুটবলের মতো
যাকে সবাই আনন্দের জন্য লাথি মারে
কিন্তু কখনও তাকে ভালোবাসে না।
পুরুষ একটি সেই বিচিত্র জীব যা
কুৃঁজোর মতো সারাজীবন শুধু উপুড়
হয়েই বসে থাকে কিন্তু কখনও চিৎ
হওয়ার বাসনা করতে পারে না…..