যেদিন চলে যাবে
——— প্রতাপ মণ্ডল
— এতো বেহায়া কেনো তুমি?
তাড়িয়ে দিচ্ছি, তবু কেনো যাচ্ছো না চলে….?
এখনও দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কি দেখছো অমন করে?
শ্রাবণ এখনও আসেনি, তবু দেখো বাদল কেমন ঝরছে অঝোরে!
” —যদি আমি চলে গেলে তুমি সুখী হও–
তাহলে বেশ, এই আমি পা বাড়িয়ে দিলাম অজানায়
আর কোনোদিনও ডাকলে পাবে না কিন্তু আমায়..!”
—তোমাকে তো চেয়েও পাইনি আমি,
শুধু রেখে যাচ্ছো তুমি কিছু স্মৃতির ভার…..
কিছু স্মৃতি নয়, রেখে যাচ্ছো স্মৃতির পাহাড়।
“তাহলে আমায় যেতে দিচ্ছো কেনো?
তুমি বললেই আমি তোমার হয়ে থাকবো চিরকাল
স্মৃতি নিয়ে কি জীবন কাটানো যায় বলো…!
তাহলে আমায় নিয়ে কেনো মিথ্যে বুনলে কল্পনাজাল?”
— জানিতো তুমি আমার কোনোদিন হবে না…!
তাইতো তোমায় এতো ভালোবেসে গেছি, আজও বাসি
চিরকাল আমি শুধু তোমায়, হ্যাঁ…তোমায় শুধু ভালোবাসবো
তোমার আমার কতো আদর-খুনসুটি-
কতো রঙিন সময়ের কথা ভেবে আমি কাঁদবো… হাসবো।
“তোমার বুঝি স্মৃতি নিয়ে থাকতে ভালো লাগে?
কিন্তু আমি যে চেয়েছিলাম, তোমাকে নিয়ে ঘর বাঁধতে।
সুখে না হোক, দুঃখেই কাটিয়ে দিতাম দু’জনে
সত্যি বলছি, এর বেশী আর কিচ্ছু চাইনি কোনোদিন পেতে।
তোমাকে একটু ছুঁয়ে থাকা, নাহয় কখনো থাকতো দু’জনের রাত জাগা
কিছু খুনসুটি আদর, কখনো তোমার একরাশ অভিমান….
কেনো আমায় যেতে বলছো আজ? কেনো আজ মনে বিরহের গান?”
— তবে শোনো, আমার আয়ু আর কিছুদিনের।
আমি চলে যাবো অনেকদূর, মিশে যাবো ওই তারায়
পিছুটান বলতে তুমিই ছিলে, জানি আজ বড় আঘাত পেলে!
কিন্তু নিয়তি যে বড় নিষ্ঠুর….!
তা না হলে তোমায় ছেড়ে আমাকে কেনো চলে যেতে হবে অনেকদূর?
দাঁড়িয়ে থেকো না তুমি আর, চলে যাও আমার চোখের সামনে থেকে
মায়ার বাঁধন ছিঁড়ে ফেলো, তুমি শুধু থাকো খুব খুউব সুখে।
“কিন্তু, আমি যে আর যেতে পারবোনা তোমায় ছেড়ে
নিয়তি যদি তোমায় নেয়…. নিক না কেড়ে,
আমি পাথরের মতো তোমার শিয়রে থাকবো বসে
কে আর সুখ পায়, বলতো ভালোবেসে……?
কাছে এসো, আমার বুকে রাখো মাথা।
যেদিন চলে যাবে, সেদিনও ঠিক এমনি করেই আমার বুকে মাথা রেখো
তুমি তাড়িয়ে দিলেও, আমি কোনোদিন তোমায় ছেড়ে যাবো না দেখো। ”